ভোগ বিলাসিতা ও আত্মসাৎ এর সূতিকাগার রাষ্ট্রের একমাত্র জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ১:০৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩

রির্পোটিং,নিজস্ব প্রতিবেদক : বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের অধীনে জীবন বীমা কর্পোরেশন এর ২০১৮-২০১৯ এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের আয় ব্যয় ও বাজেট বরাদ্দের বিপরীতে সম্পাদিত কাজের রেকর্ড পত্র নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে পরিকল্পনা প্রণয়নপূর্বক অডিট করা হয়।

অডিট চলাকালে বেশ কিছু আর্থিক অনিয়ম ও বিধি-বিধানের লঙ্ঘন পরিলক্ষিত হয়েছে। মূলত প্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরীন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা ও আর্থিক বিধি-বিধান পরিপালন না করার কারণে অডিট আপত্তি সমূহ উত্থাপিত হয়েছে। অডিট চলাকালে ০১(এক) টি অডিট আপত্তি নিরীক্ষিত প্রতিষ্ঠানের জবাবের প্রেক্ষিতে নিষ্পন্ন করা হয়েছে।

অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তিগুলোর মধ্য হতে দ্রুত আর্থিক অনিয়ম(SFI) সংক্রান্ত আপত্তি সমূহ এই রিপোর্টে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। যেখানে দেখা যায় যে, এই রিপোর্টে অডিট আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে এতে জড়িত টাকার পরিমাণ ৪৩ কোটি ৮০ লক্ষ ২৪ হাজার আট শত নয় টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩.৪৭%। এই রিপোর্টের মাধ্যমে আরো জানা যায় উল্লেখযোগ্য অনিয়মসমূহঃ
* সরকারি আদেশ নির্দেশ যথাযথ ভাবে অনুসরণ না করা।
* কর্পোরেশনের মুনাফার ৫% সরকারি কোষাগারে জমা না করা।
* জীবন বীমা কর্পোরেশন) কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরির প্রবিধান মালা, ১৯৯২ এর পরিপালন না করে নিয়োগ প্রদান।
বীমা আইন ২০১০ এর অনুচ্ছেদ ৬২(১) এবং আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ৪র্থ সিডিউলের অনুচ্ছেদ ২(সি, ডি) লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়।
* বাজেট অতিরিক্ত ব্যয় করা।

জীবন বীমা কর্পোরেশনের ২০১৮-২০১৯ এর নথিপত্র নিরীক্ষায় দেখা যায় যে,ডি.এম-১/২৭৩৩ জনাব বি কে বৈদ্য (অবঃ) জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ১২ জন বীমা গ্রাহকের ১১ লক্ষ ২৫ হাজার ১৩৯ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৯-২০২০ এর নথিপত্র নিরীক্ষায় আরো দেখা যায় যে, উন্নয়ন অফিসার-১/১৫২৯ জনাব মোঃ তাকভীর হোসেন(সবুজ) ঢাকা রিজিওনাল অফিসে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে প্রতারণার মাধ্যম ৭ লক্ষ ৭ হাজার ৮৯৯ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২জনে মিলে সর্বমোট ১৮ লক্ষ ৩৩ হাজার আটত্রিশ টাকা আত্মসাৎ করেন, কিন্তু এ আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধারের কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।

ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন অ্যাক্ট ১৯৭৩ ও বীমা কর্পোরেশন আইন ২০১৯ অনুযায়ী কর্পোরেশনের মোট মুনাফার ৫% অর্থ কোষাগারে জমা না করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ২২ কোটি ৫৭ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমোদন ব্যতিত উৎসাহ বোনাস প্রদান করায় কর্পোরেশনের আর্থিক ক্ষতি ৮ কোটি ৪৮ লক্ষ ২৪ হাজার ৮২৬ টাকা। বকেয়া ভাড়া আদায় না হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি ২৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৯৯ টাকা। ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫ লঙ্ঘন করে অনিয়মিতভাবে লাঞ্চ সাবসিডি করার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি ১৩ লক্ষ ৭ হাজার ৫৮০ টাকা।

আদায়কৃত অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে ৭ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৪৬ টাকা। ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সর্ব মোট আত্মসাৎ এর পরিমান ৪৩ কোটি ৮০ লক্ষ ২৪ হাজার ৮০৯ টাকা। আরো বিস্তারিত আসছে সাপ্তাহিক রিপোর্টিং এর আগামী সংখ্যায়।