একাধিক ব্যক্তির কাছে ব্যাংকে বন্ধক রাখা জমি বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩

রিপোর্টিং, নিজস্ব প্রতিনিধি : তথ্য গোপন করে ব্যাংকে বন্ধক রাখা জমি একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে আলহাজ্ব নবীউল্লা বাবু বিরুদ্ধে। জমির দলিল বন্ধক রেখে এক্সিম ব্যাংকের একাধিক শাখা, মার্কের্ন্টাইল ব্যাংক সহ একাধিক ব্যাংক থেকে আনুমানিক ৬৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন আলহাজ্ব নবীউল্লাহ বাবু গং। ২০২২-২৩ সালের দিকে এসব জমি একাধিক ব্যক্তিকে অপ্রত্যাহার যোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও বায়না/সাব কবলা দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।

ঋণের টাকা কোথায় বিনিয়োগ করেছেন, তার কোন তথ্য নাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রতিনিয়ত এসব কাজ করছে। এখন থেকে ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধ হবে না।

এক্সিম ব্যাংকের সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে নিজ নামে নবীউল্লাহ বাবু , মিরপুর শাখা, বনগ্রাম মৌজা, আর এস ৪০ দাগে, ৭৮ শতাংশ জমি দিয়ে ১.৫ কোটি টাকা। কিছুদিন পরে একই শাখা থেকে আর এস ৪০ দাগে, ৩১ শতাংশ জমি দিয়ে ১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে থাকেন। নবীউল্লাহ বাবুর নামে, এক্সিম ব্যাংক, বেগম রোকেয়া স্মরণ, মিরপুর শাখা থেকে, আর এস ৫৭, ৩৯, ৩৭, ৪০ দাগে মোট ১৬ শতাংশ জমি দিয়ে, ১.৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন।

আই সি বি ইসলামি ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আলহাজ্ব নবীউল্লাহ বাবু, তার ছেলে নাফিস উল্লাহ শুভ, স্ত্রী সাবেরা খাতুন, কাওরান বাজার শাখা, আর এস ২২২৫, ২১৭৩, ৪০ দাগে মোট ১১২ শতাংশ জমি দিয়ে ১৪.২০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন।

মার্কের্ন্টাইল ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আলহাজ্ব নবীউল্লা বাবু, তার ছেলে নাফিস উল্লাহ শুভ, স্ত্রী সাবেরা খাতুন, কাওরান বাজার শাখা, আর এস ৪০, ৪০, ৪০, ৪২, ৩, ৪, দাগের জমি দিয়ে ১৭ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়েছেন।
ইতিমধ্যে বনগ্রাম মৌজার নবীউল্লাহ বাবু নামে থাকায় ৩৪৩ শতাংশ জমি একাধিক লোকের কাছে বায়না ও সাব কবলা করে দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন প্রতিবেদকে জানান, আমি সাভার ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিঃ এর চেয়ারম্যান, সাভার বনগ্রামে আমাদের একটি প্রজেক্ট রয়েছে। আমাদের পাশে নবীউল্লাহ বাবুর বেশ কিছু জমি রয়েছে। তিনি তথ্য গোপন করে কাঁচা বায়না করে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ২০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। কিছুদিন পরে জানতে পারি, বায়নাকৃত জমি ব্যাংকে বন্ধক দেওয়া। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি তালবাহানা শুরু করেন। অর্ধেক টাকা ফেরত দিয়েছেন। এখনো নবীউল্লাহ বাবুর কাছে ১০ লক্ষ টাকা পাওনা আছি।

তিনি আরো জানান, গত ১৬/০৬/২০২২ ইং তারিখে, দলিল নং ১১৭৮৮, মোহাম্মদ আলী ও তার ভাই মোঃ দেলোয়ার হোসেন নামে একটি পাওয়ার দিয়েছেন। একই জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তথ্য গোপন করে, ৭৫ লক্ষ টাকার বিনিময় বায়না রেজিস্ট্রি করে দিয়ে থাকেন সোরহাব গং এর নিকট।

ব্যাংকে বন্ধক রাখা একই জমি, সোরহাব গং এর বায়না রেজিস্ট্রি দলিল গোপন করে, প্রবাসী জমির উল্লাহ থেকে এক কোটি ত্রিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বায়না রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন, যাহার দলিল নং-৬৯৮২, তারিখ ৪/৪/২৩ ইং। এভাবে আরও অনেকের কাছে একই জমি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে নবিউল্লাহ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণের নামে ব্যাংক থেকে অর্থ বের করে নেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকরা জমিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকা পালন করছেন ব্যাংকাররা। অনেক ক্ষেত্রেই পারস্পরিক যোগসাজশে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের জন্য জমিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। জমির দাম কয়েক গুণ বেশি দেখিয়ে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে খেলাপি হলে জামানতের সম্পদ নিলামে তুলেও বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো।

অনুসন্ধান চলমান পর্ব-১