বাবলা দাস গুপ্ত,ক্ষমতা অপব্যবহার করে সমবায় অধিদপ্তরকে বানিয়েছেন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান- ১ম পর্ব

প্রকাশিত: ২:৩৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৩

রিপোর্টিং,নিজস্ব প্রতিনিধি : সমবায় অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী, নাম তার বাবলা দাস গুপ্ত । নিয়োগ ও তদবির বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন।
নিজের ভাই-ভাবি-স্ত্রী-ভাগ্নী- মামাতো বোন-বাসার গৃহ শিক্ষক থেকে শুরু করে ২০ জনের অধিক আত্মীয়সহ দিয়েছেন কয়েকশ কর্মকর্তাকে সমবায়ে চাকরি। উচ্চমান সহকারী তাতে কি ! বাবলার ইশারা ছাড়া সমবায় অধিদপ্তরের গাছের পাতাও নড়ে না। সরকারী একটি সংস্থাকে পারিবারিক অধিদপ্তর বানিয়েছেন।

১৭ বছরের চাকরির জীবনে নিয়োগ বানিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সমবায় অধিদপ্তরের নাম ভাঙ্গািয়ে সদস্যদের শোষণ করে অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন, নিজ নামে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে কিনেছেন ফ্ল্যাট ও জমি। ঢাকায় বসেই কলকাঠি নাড়েন তিনি, নিজ সিন্ডিকেটের মানুষদের পছন্দের পোস্টে বসালেও অপছন্দের লোকদের ফেলছেন বিপদে, অনেকেরই খেয়েছেন চাকুরী। এতো এতো অভিযোগ থাকতেও বহাল তবিয়তে করে যাচ্ছেন নিজ কর্মযজ্ঞ।

বাবলা দাস গুপ্ত অফিস সহকারী থেক ছয় জনকে পাশকাটিয়ে নিয়েছেন পদোন্নতি, হয়েছেন উচ্চমান সহকারী। অভিযোগ পাওয়া যায় প্রায় ৫ শতাধিক লোককে অর্থের বিনিময়ে চাকুরী দিয়েছেন, এর মধ্যে নিজ পরিবারের প্রায় ২০ জন আত্মীয় স্বজনকে সমবায় অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখায় চাকুরী দিয়েছেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাবলা দাস গুপ্তের আপন ছোট ভাই সঞ্জয় দাস গুপ্তকে সরজমিন তদন্তকারী কর্মকর্তা, সঞ্জয় দাস গুপ্তের স্ত্রী লাবনী চৌধুরীকে প্রশিক্ষক, বোনের মেয়ে ভাগিনী নীতি রানী পালকে পরিদর্শক, বাবলার আরেক ভাই এর স্ত্রী শাপলা প্রভা দে’কে পরিদর্শক, বাবলা দাস গুপ্তের ছোট বোন শ্রাবন্তী দাস গুপ্তা পরিদর্শক, বাবলা দাস গুপ্তের ১ম স্ত্রী মীরা নন্দীর ভাই নয়ন নন্দী, বাবলা দাস গুপ্তের আরেক বোন পল্লবী দাস গুপ্তা অডিটর, বাবলা দাস গুপ্তের ২য় স্ত্রী জয়শ্রী দাস প্রশিক্ষক পদে সহ আরো অনেকে। বাবলা দাস গুপ্ত তার আত্মীয় স্বজনদের অধিকাংশ চাকুরী দিয়েছেন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা সমবায় অফিসে।

বাবলা দাস গুপ্তের ক্ষমতাকে পুঁজি করে তার স্বজনরা সরকারী জমি দখল এবং অর্থ আত্মসাৎ এর মহোৎসবে মেতেছেন। কক্সবাজার জেলার বোমা তলী গ্রাম, এ গ্রামের নামেই গোমাতলী কৃষি ও মোহাজের উপনিবেশ সমিতি, ১৯৭৭ সালে ১৪৯জন ভূমিহীন সদস্যের মাঝে আড়াই একর করে জমি বন্দোবস্ত দেয় সরকার, এদের অধিকাংশের পেশা লবন চাষ, লবন চাষের মাধ্যমেই চলে এদের সংসার, দেন মাসিক চাঁদাও। এ চাঁদা দিয়ে সদস্যদের ভাগ্য উন্নয়নে ব্যায় হবার কথা থাকলেও সেই সমিতির উপর পড়ে শকুনের থাবা, এই শকুন হচ্ছে বাবলা দাসের ছোট ভাই সঞ্জয় দাস গুপ্তের, সদস্যরা জানান বাবলার প্রভাবে সঞ্জয় সদস্যদের দিয়েছে ২একর জমি যেখানে সরকার বরাদ্দ দিয়ছে আড়াই একর করে, বাবলা সঞ্জয়ের মা সাধনা দাস আমাদের উপর অত্যাচার করে আসছে। শুধু এই নয়, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চিংড়ির ইজারা বাবদ আয় ২কোটি ৩০লাখ টাকা, সেই টাকার হিসেব পাওয়া যায়নি গত কয়েক বছরেও।

এখানেই শেষ নয় ২০২১ সালে সমিতির চলতি মেয়াদ শেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হন সঞ্জয় দাস গুপ্ত এর কিছু দিন পর সভাপতির পদে বসেন সে সময়ে সমিতির বকেয়া চাঁদাও আদায় করা হয় এবং কমিটি নির্বাচনের মনোনয়ন বিক্রি করেও আয় হয় মোটা অংকের টাকা, যদিও করোনার কারনে আটকে যায় নির্বাচন, পরে সঞ্জয় সমিতির সভাপতির পদে বসান ভাগ্নী নিতীরানী পাল’কে।

অভিযোগ পাওয়া যায়, নির্বাচনের মনোনয়নের টাকা ও বকেয়া চাঁদার ২৩লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন সঞ্জয় দাস গুপ্ত। নিতীরানী পাল নাম মাত্র সভাপতি হলেও পিছন থেকে কলকাঠি নাড়েন সঞ্জয় দাস গুপ্ত, আরো অভিযোগ পাওয়া যায় একটি জমির রাস্তা ও ভবন মেরামতের নামেও আত্মসাৎ করেন ৫৪লাখ টাকা এই বাবলা সঞ্জয় সিন্ডিকেট। অবৈধ ভাবে চিংড়ি চাষের জমি ইজারা দেয়ার ৬০ লাখ টাকা নির্বাচনের পূর্বে সদস্যদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার কথা থাকলেও নিতীরানী পাল এ টাকা আত্মসাৎ করেন। শুধু তাই নয়, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ৭জন নতুন সদস্য গ্রহণ করে ভোটে সঞ্জয় দাস গুপ্তের পছন্দের অনুগত আব্দুল্লাহ খান’কে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আরো বিস্তারিত আসছে সাপ্তাহিক রিপোর্টিং এর আগামী সংখ্যায়।