ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউট এ সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২২

রিপোর্টিং,বিশেষ প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে-ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউটের নামে খারিজ-খতয়িানভূক্ত ভূমি রক্ষা ও শিক্ষক কর্মচারী, শিক্ষার্থীদেরকে ভয়-ভীতি র্প্রদশন ও সরকারী বরাদ্ধকৃত ভবন নির্মাণে বাধা সৃষ্টিকারীদের শাস্তির দাবিতে কলজে চত্তরে গত ২১-১০-২০২২ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ঘন্টা ব্যাপি প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীবৃন্দ।

গত রবিবার জমির মালিক দাবিদার মোহাম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ গত বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠিত সভা ও মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সন্মলেন করেন।আবার মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজের গত রবিবারের সংবাদ সন্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়ে আজ পাল্টা সংবাদ সন্মেলন করেন ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউটের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীবৃন্দ। সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবু তৈয়ব ছালাহউদ্দনি।

তিনি তার বক্তব্যে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন,আপনারা সহ এলাকাবাসী জানেন যে, বিগত ০২/০৬/২০০১ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের নিমিত্ত অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মতামতের ভিত্তিতে এবং দাতার স্বীয়ভ্রাতা মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজসহ উভয়ের পিতা মরহুম আলহাজ্জ্ব দারাজ উদ্দিন মন্ডল সাহেবের সম্মতিতে অত্র প্রতিষ্ঠানটি পূর্ব গৌরিপাড়া মৌজায় ২৪৯ নং দাগে স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় প্রমাণাদির কাগজ দেখিয়ে বলেন।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কৃর্তক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পূর্বানুমতির শর্ত হচ্ছে সকলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নির্ধারিত ও স্ব-জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করা। যার ফলশ্রুতিতে ২০০১ ইং সালেই সবার অনুমতিতে ও জ্ঞাতসারে অবকাঠামো নির্মাণ করি এবং তৎপরবর্তীতে ফুলবাড়ী পৌরসভার অনুমোদনক্রমে ৫ (পাঁচতলা) বিশিষ্ট বিল্ডিং নির্মাণের নির্মিত্তে একটি পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করি। আপনারা সহ অত্র এলাকার গ্রাম বাসীসহ সবাই জানেন আমার হাতের প্রমাণ স্বরুপ কাগজ আছে। আমাদেও প্রতিপক্ষ আপনাদেরকে যে তথ্য দিয়েছে তা ভুল, ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট তাদের দলিলে কোন দিকে চৌহদ্দি আছে তা আমাদের জানা নেই।

গত ০১/০৯/২০২২ ইং তারিখে ফুলবাড়ী পৌরসভা কর্তৃক প্রেরিত ০৫/০৯/২০০২২ ইং এবং ০৭/০৯/২০২২ ইং দুইটি তারিখের কথা বলেছেন যে, উক্ত নালিশি জায়গায় মাপ জরিপের কাজ সম্পন্ন করেন, আবার কখনও বলেছেন সার্ভেয়ার এর সময় স্বল্পতার কথা। আসলে কি সেখানে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর আছে? স্বক্ষর নাই। তাহলে সমঝোতা কিসের। এটা ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আসলে উক্ত তারিখের পূর্বেই অত্র প্রতিষ্ঠানের কমিটির অনুমোদনক্রমে গত ২৩/০৮/২০২২ ইং তারিখে ৫১/২০২২ অন্য একটি মোকদ্দমা মহামান্য বিজ্ঞ যুগ্ম জজ- ১ম আদালত, দিনাজপুরে মামলা দায়ের করা সহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে গত ১২/১০/২০২২ ইং তারিখের মধ্যে জবাব দাখিলের দিন ধার্য্য করা ছিল।

জবাব না দিয়ে মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজ এর জামাতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ফুলবাড়ী পৌরসভা, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর এ কর্মরত । মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সু-কৌশলে পৌরসভাকে ভুল বুঝিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরকারী জমি মাপযোগ করে জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। যা কোন ভাবেই আইনত ও ন্যায়ত নয়। পৌর সভার একজন কর্মকর্তা হয়ে বিনা নোটিশে তার সাঙ্গপাঙ্গ ও অপরিচিত লোকজনদের নিয়ে বিজ্ঞ আদালতের আইন অবমাননা করে অফিস চলাকালিন সময়ে তার উপর আরোপিত চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করে গত ১৯/১০/২০২২ ইং তারিখ আনুমানিক সকাল ১১ টায় প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে এসে শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের ভয়ভিতিসহ প্রতিষ্ঠানের চৌহদ্দিকৃত জায়গায় জবর দখলের অপচেষ্টা চালান। আমরা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আইনগত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।

অধ্যক্ষ বলেন আসলে বিগত ২৮/০৮/২০১৭ ইং তারিখে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের নির্দেশে এবং দলীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে নালিশি জায়গা বিষয় সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান পূর্ব দিকে ০.৩৫ শতাংশে এবং মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজ গংরা পশ্চিমাংশে ০.৩২ শতাংশে অবস্থান করিবেন মর্মে একটি সমঝোতা চুক্তি সম্পন্ন হয় এই কাগজ তার প্রমাণ।

প্রতিপক্ষ সংবাদ সন্মেলনে প্রতিষ্ঠানের নামীয় দলিল ভুয়া ও বানোয়াট বলেছেন এটাও ভিত্তিহীন। যা মাননীয় আদালত ও আইনকে অবমাননা করার শামিল। আমরা বিজ্ঞ আদালতের উপর আস্থাশীল। আদালতের রায়ের পূর্বেই ভুয়া বানোয়াট বলা আইন পরিপন্থী। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

 

অধ্যক্ষ আরো বলেন প্রতিষ্ঠানের নামে দলিল সম্পাদনের দিন মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজ স্বয়ং নিজে মূল দলিল দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের নামে দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করার কাজে সহায়তা করেছিলেন এবং রেজিষ্ট্রি সম্পাদনের পরের দিন মূল দলিল ফেরত নিয়ে যান। বর্তমানে তার পিতার নামীয় যাবতীয় মূল দলিল পত্রাদী পূর্ব থেকে এবং বর্তমানেও তার কাছে গচ্ছিত আছে। এটা গ্রামবাসী সবাই জানেন। আসলে ভুয়া বানোয়াট দলিলের ব্যপারে মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজসহ গংরা ভাল বলতে পারবেন। অত্র জায়গায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘ ৬০/৭০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। মোহম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ গংরা কখনও কোন দিনও এখানে বসবাস করতেন না। এলাকাবাসীরা সবাই জানেন এবং আপনাদেরকে অবগত করছি। মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজ এর বক্তব্যের দলিল নং ও তারিখ ভুল এবং অসত্য।

প্রতিষ্ঠানের নামে দলিল দাতা মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন অংশিদার কিনা সাংবাদিক ভাইদের প্রতি প্রশ্ন রইল?। সেটাও তদন্তের প্রয়োজন। ভিত্তিহীন বক্তব্যের আমরা নিন্দা জানাই। মরহুম আলহাজ্জ্ব দারাজ উদ্দিন মন্ডল জীবদ্দশায় পুত্রদ্বয়ের নামে কোন প্রকার বন্টকনামা/বাটোয়ারা দলিল সম্পাদন করেন নাই। ফুলবাড়ী থানার দৌলতপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বারাই পাড়া মৌজায় প্রয়াত মরহুম দারাজ উদ্দিন এর রেকর্ডিয় ২১.৮৩ (একর) এর মধ্যে মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজসহ তার গং ১৬.১১ (একর) জমি এমনকি ১৫ থেকে ২০ বিঘার উপর বাস্তুভিটা সম্পূর্ণটা নিজের স্ত্রীর নামে, দাদীর নামীয় ০৮ (একর) জমি একাই বড় মেয়ের নামেসহ ঢাকায় ১০ তলা বিল্ডিং, ফুলবাড়ী পৌর সভায় কাঁটাবাড়ী, সুজাপুরসহ অন্যন্য মৌজায় নামে-বেনামে প্রায় ৩০০ বিঘা জমি ছেলে-মেয়ে, বৌ, নাতি এবং জামাই এর নামে হস্তান্তর করেন এবং কিছু জমি চুপি সারে বিক্রয় করতঃ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের ১৯৮৪ ইং সালের ভূমি সংস্কার আইনকে ফাঁকি দিয়ে, সরকারের সহিত প্রতারণা করেছেন এই তার প্রমাণের কাগজ। আমরা এর নিন্দা জানাই।

মোহম্মদ আলী কাদের নেওয়াজ হাই কোর্টের মামলার স্থিতাবস্থার কথা বলেছেন, কখনো বলেছেন জজ কোর্টের অস্থায়ী নিয়েধাজ্ঞার কথা, আবার কখনো বলেছেন আমরা সেখানে থাকি, আবার কখনো ৩৭/২০০৭ নং বাটোয়ারার কথা বলেছেন, আবার গত ২৩/১০/২০২২ ইং তারিখে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছেন, আমরা দখল পাচ্ছিনা। কখনো ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ নালিশি জায়গা সম্পর্কিত বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন মর্মে আপনাদেরকে বলেছেন। গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ/উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের জায়গা দখল করতে বলে ছিলেন, না অবশিষ্ট জায়গা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে বিক্রয়/দান করতে বলেছিলেন। আসলে সব তথ্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে খাটো করে দেখা তাদের একটি স্বভাব। সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

অধ্যক্ষ মোঃ আবু তৈয়ব ছালাহউদ্দিন সাংবাদিকদেও বলেন প্রতিষ্ঠানটি সবার জ্ঞাতসারে ২০০১ ইং সালে স্থাপিত হয়ে দীর্ঘ ২১/২২ বছর ধরে পরিচালিত এবং সরকার কর্তৃক প্রণিত নবায়ন ফি, খাজনা-খারিজ, বিদ্যুৎবিলসহ অন্যান্য যাবতীয় ফি হালনাগাদ পর্যন্ত পরিশোধিত হয়েও কেন প্রতিষ্ঠানের নামে নামীয় চৌহদ্দিকৃত অংশে এবং স্থানীয় এমপি মহোদয়ের অনুকম্পা, ডিওপত্র ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রাপ্ত সরকারী অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবেনা, কেনইবা প্রতিষ্ঠানের সামনের অংশে অবস্থিত খেলার মাঠ রক্ষায় অপ-দখলকারীদের বাঁধা প্রদান করা যাবেনা এর কারণসহ সুষ্ঠ বিচার মহামান্য সরকারের তথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

আসলে সরষের মধ্যে ভুত, মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাংবাদিক মহলকে বিভ্রান্ত করছেন, জাতীকে বিভ্রান্ত করছেন, স্থানীয় প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করছেন এবং স্থানীয় এমপি মহোদয়কেও বিভ্রান্ত করছেন। এটা সম্পূর্ণ সরকারের ব্যাপার। মহমান্য কোর্ট যা রায় দিবেন আমরা মাথা পেতে নেব। তারা কোন এক কুচক্রি মহলের চক্রান্তে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য পাঁয়তারা করছেন। এই জমির মালিক আমি না বা আমার পরিবারও না। প্রতিষ্ঠানের জায়গাটি বর্তমানে সরকারের। আমি প্রতিষ্ঠানটিকে রক্ষণা-বেক্ষণের দায়িত্বে আছি মাত্র। আমি সরকারের পক্ষে কাজ করছি। মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজ গং এর জায়গাটি প্রতিষ্ঠানের পশ্চিমাংশে বিদ্যমান আছে। তিনি যে কোন সময় নিতে পারে। তাতে আমার কিংবা প্রতিষ্ঠানের আপত্তি থাকবে না।

তারা কেন প্রতিনিয়ত প্রতিষ্ঠানে এসে প্রতিষ্ঠানের পূর্বে নির্মিত চৌহদ্দিকৃত অবকাঠামোতে জবর দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বা কেনই প্রতিষ্ঠানের নামে সরকারী নতুন স্থাপনা তৈরীতে বাঁধা প্রয়োগসহ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিষেধ করছেন? এতে প্রতিয়মান হয় যে, মোহাম্মদ আলীকাদের নেওয়াজ গং সহ তার জামাতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম-প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ফুলবাড়ী পৌরসভা, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্বক কাজে লিপ্ত আছেন। সরকারী বরাদ্দকৃত ও অর্থায়নে ৪ তলা ভবন নির্মাণে বাধা সৃষ্টিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলন শেষে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দুইটি প্রতিনিধি দল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সচীব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ স্থানীয় পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপেিজলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ফুলবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করেন। জাতীয় দৈনিক প্রিন্ট,অনলাইন পত্রিকা ও স্থানীয় দৈনিক প্রিন্ট-অনলাইন পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে ‘ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউট’-কে ন্যায়সঙ্গত ভাবে রক্ষার জন্য সহযোগিতায় কামনা করেন।