আজ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২ তম জন্মবার্ষিকী

প্রকাশিত: ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২২

রির্পোটিং ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস তারই সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন সোমবার। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মা। তার বাবা শেখ জহুরুল হক ও মা হোসনে আরা বেগম।

১৯৩০ সালের এ দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন এই মহীয়সী নারী। বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হতো ৯২ বছর।

দিবসটি জাতীয়ভাবে পালিত হবে। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন ৮ আগস্ট ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেব ঘোষণা করা হয়। বঙ্গমাতার এবারের জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা;অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা।‘

জাতির পিতার আমৃত্যু সঙ্গী, বাংলার মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার ডাকনাম ছিল রেণু। বঙ্গবন্ধু তাকে এ নামেই ডাকতেন। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে রেণু ছিলেন ছোট। তিনি ৫ বছর বয়সেই পিতামাতা হারান। ৮ বছর বয়সে চাচাতো ভাই শেখ মুজিবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকেই তিনি ছিলেন জাতির পিতার আমরণ সঙ্গী। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। কেবল তাই নয়, যে কোনো পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন দক্ষ হাতে।

স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার দিনে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবও খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।

বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দী জীবনযাপন করছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীরা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কাছে ছুটে আসতেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা জানতে। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন।

বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ছয়-দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দী ছিলেন, তখন দলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীরা বঙ্গমাতার নিকটে ছুটে আসতেন, তিনি তাদের জাতির পিতার বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাতেন।

তারা বলেন, আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি নিয়ে একটি কুচক্রী মহল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২ তম জন্মবার্ষিকী স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে আওয়ামী লীগ যথাযথ মর্যাদায় পালন করবে। দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সোমবার সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে শেখ ফজিলাতুন্নেছা নেছা মুজিবের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। পরে কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের করা হবে।

সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘বাঙালি মহীয়সী নারী শহীদ শেখ ফজিলাতুন্নেছা নেছা মুজিব’শীর্ষক আলোচনা সভা এবং প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ করবে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি। একই সময়ে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আলোচনা সভা করবে দলটির বন ও পরিবেশ উপকমিটি।

সকাল ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা করবে যুবলীগ, ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা করবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। পৃথক কর্মসূচি পালন করবে মৎস্যজীবী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ।

বঙ্গমাতার ৯২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচ নারীকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা নেছা মুজিব পদক-২০২২’ প্রদান করবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।