জেলার সিএনজি মেট্রোতে সাদা প্রাইভেট সিএনজি টিআই সার্জেন্টদের দখলে

প্রকাশিত: ১:২৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩

রির্পোটিং,নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকায় সড়ক মহাসড়কে দিনরাত দাপিয়ে বেড়ায় ঢাকা জেলার নম্বর সম্বলিত সিএনজি এবং প্রাইভেট লেখা সাদা এস কালারের সিএনজি। যা পরিপূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং বেআইনি। তবুও তারা রাজধানীর সড়ক মহাসড়কে সয়লাব। বাঁধাহীন দাফিয়ে বেড়ায় রাজধানীর মেট্রো এলাকার এ প্রান্ত থেকে ওইপ্রান্তে।

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা জেলার সিএনজি গুলো মেট্রো এলাকায় প্রবেশের পিছনে রয়েছে অসাধু কিছু ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের মাসিক মাসহারার মাধ্যমে। যারা প্রতিমাসেই মেট্রো প্রবেশ বাবদ এসব সিএনজি থেকে মোটা অঙ্কের মাসহারা পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে, প্রাইভেট লেখা সাদা দূসর রঙ্গের সিএনজি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও তা এখন কয়েকগুন বেড়ে সকল সড়কে দাঁপিয়ে বেড়ায়। যার পিছনে রয়েছে, ট্রাফিক বিভাগের টিআই এবং সার্জেন্টদের বিশাল অঙ্কের মাসহারা। কোন কোন সিএনজিতে ভিন্নতাও দেখা যায়। সেগুলোর গায়ে সরাসরি ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট টিআইদের নাম্বার লেখা থাকে।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্র বলছে, রাজধানীতে চলাচলের জন্য ঢাকা মেট্রো নাম্বার সম্বলিত মাত্র ৫ হাজার সিএনজির অনুমোদন রয়েছে। অন্যদিকে প্রাইভেট সিএনজি হিসেবে ব্যবহৃত সিএনজির সংখ্যা মাত্র ২ হাজার। কিন্তু সবুজ রংয়ের সিএনজির সংখ্যা এখন লাখ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি, সাদা দূসর রংয়ের প্রাইভেট সিএনজিও প্রায় ৫০ হাজারের ওপরে চলাচল করছে। মাঝেমাঝে বিআরটিএ’র অভিযান হলে এসব সিএনজি গ্যারেজ থেকে বের না করার তাদের আটক করা তেমন সম্ভব হয় না।

অনুসন্ধান বলছে, ঘুরেফিরে এসব সিএনজির সাথে ট্রাফিক বিভাগের গোটা কয়েকজন টিআই এবং সার্জেন্ট জড়িত। যারা এক সময় রাজধানী ঢাকার মেট্রো এলাকায় ডিউটি করেছিলেন। সেই সুবাদে প্রতি জনের ১০ থেকে ৫০ টি প্রাইভেট সিএনজির মালিক হওয়ার খবর অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে। ঢাকার মিরপুর, শেওড়াপাড়া, বসিলা, মোহাম্মদপুর,হাজারীবাগ,রায়েরবাজার,শনিরআখড়া,রায়েরবাগ,বাড্ডাসহ বেশ কয়েক এলাকায় এসব প্রাইভেট সিএনজি গ্যারেজ করে রাখা হয়।

এছাড়াও,সবুজ রংঙের সিএনজিগুলো সাদা দূসর রং করে গায়ের ওপর প্রাইভেট লেখে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এক সময় কখনো কোন সার্জেন্টের হাতে আটক হলে সংশ্লিষ্ট ওই সার্জেন্ট তা ছাড়িয়ে নিতে ফোন করতেন কিংবা সিএনজিতে থাকা ড্রাইভার নিজেই তার মালিক সার্জেন্টকে ফোন করে দায়িত্বরত সার্জেন্টকে ধরিয়ে দিতেন। যার সুফল হিসেবে সিএনজিগুলো ছেড়ে দেওয়া হতো। এভাবেই আস্তে আস্তে প্রতিটি এলাকার সার্জেন্টদের ম্যানেজ করে চলতে থাকা প্রাইভেট সিএনজিগুলো এখন মাসহারার আওতায় চলে এসেছে। যার ফলে, এখন আর রাস্তায় এগুলো চলাচল করতে বেগ পেতে হয় না।

সূত্রে জানা যায়, চুরি কিংবা ছিনতাই হওয়া এসব সিএনজির কখনো রং পাল্টে আবার কখনো নাম্বার প্লেট পাল্টে রাস্তায় নামে। এছাড়াও, সিএনজিগুলোর গায়ে সার্জেন্ট এবং টিআইদের নাম লেখা থাকায় কেউ কখনো নুজপর সিএনজি দাবি করে আটক করার সাহস পায় না। যার ফলে চুরি কিংবা ছিনতাই হয়ে যাওয়া সিএনজিগুলো আর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

রাজধানীর সড়ক এবং মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়ানো এসব সিএনজি’র পিছনে ট্রাফিক বিভাগের কোন টিআই এবং সার্জেন্ট জড়িত এবং কোন কোন এলাকায় কার কয়টি প্রাইভেট সিএনজি রয়েছে। কে কোন সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে কতো টাকা মাসহারা পায়। তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন আমাদের অনুসন্ধানীর দ্বিতীয় পর্বে।