ময়মনসিংহ ফুলপুরের জাতীয় পার্টির নবগঠিত কমিটি ভূয়া সদস্যদের নিয়ে গঠিত

প্রকাশিত: ১:০৭ পূর্বাহ্ণ, মে ১৫, ২০২২

রির্পোটিং রুপম রুহুল : জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। এক সময় সারা বাংলাদেশের সাংগঠনিক অবস্থা ছিল শক্তিশালী। দলটি বর্তমানে তৃণমূল পর্যায়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে। দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠনের অংশ হিসেবে চলতি মাসের ৪তারিখে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে দলটির দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতা কর্মীদের অভিযোগ ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অধিকাংশই ভুয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে। ঘোষিত কমিটির অনেকে আবার জানেই না তাদের নাম এসেছে জাপার কমিটিতে। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখান করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি। ক্ষমতা হারানোর পর প্রভাবশালীদের দল ত্যাগ , নিষ্ক্রিয়তা আর অগণতান্ত্রিক কিছু সিদ্ধান্তে দলের এমন অবস্থা বলে মনে করেন জাপার কর্মী সমর্থকরা। জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে দল পূর্নর্গঠনের অংশ হিসাবে দীর্ঘদিন পর গত ৪ মে ফুলপুর উপজেলা জাপার ৭১ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় অতিরিক্ত মহাসচিব এবং ময়মনসিংহ জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইমাম এমপি । ফুলপুর উপজেলার স্থানীয় জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতাকর্মীর অভিযোগ অনুমোদিত নতুন কমিটির বেশকিছু সদস্য যাদের নাম ও ফোন নাম্বার ভূয়া। যার ফলশ্রুতিতে নতুন কমিটি নিয়ে চরম বিতর্ক ও প্রশ্নের মুখে পড়েছে ফখরুল ইমাম এমপি। ফখরুল ইমাম এমপির দ্বারা জেলা জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ হেনস্তার শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। নিজের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ত্যাগী নেতাদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদেরকে কমিটিতে জায়গা করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ফখরুল ইমাম এমপির বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবগঠিত ফুলপুর উপজেলায় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুলহাস উদ্দিন বেশির ভাগ সময় এলাকায় থাকেন না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পুটন সাহা , সাংগঠনিক সম্পাদক মনসুর আলী , যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক আব্দুল গফুর , কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রইছ উদ্দিন সরকারসহ কমিটির এক তৃতীয়াংশ সদস্যের নাম পরিচয় মোবাইল নাম্বার ভূয়া । অনেকে আবার জানেই না তাদের নাম এসেছে জাপার কমিটিতে । জনবিচ্ছিন্ন নেতৃত্ব নিজের পদবী আকড়ে থাকতে নেতৃবৃন্দকে ভূল বুঝিয়ে গোপনে এই কমিটি অনুমোদন করিয়েছেন এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা নুর মোহাম্মদ। তিনি বলেন ২০১১ সালে ফুলপুর উপজেলা ছাত্র সমাজের আহবায়ক ছিলাম, ১২ সালে একই শাখার সভাপতি, এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের যুগ্ম সাহিত্য সম্পাদক , বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক , কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। উপজেলা জাপার সদস্য পদে থেকে এ পর্যন্ত ফুলপুরে পল্লীবন্ধু এরশাদের পতাকা বহন করে চলেছি। অথচ আজ আমাকে পদ বঞ্চিত করা হয়েছে। কাউকে না জানিয়ে বিতর্কিত লোকদের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে গোপনে কমিটি অনুমোদন করিয়ে আনা হয়েছে। অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল দলীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও জাতীয় ছাত্র সমাজ ফুলপুর উপজেলার সাবেক সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান মিলন , বর্তমান সভাপতি ইরান আহম্মেদ মানিক, রফিকুল ইসলাম , মোঃ হান্নান , আবুল হাসেম , সোহেল মিয়া , আমিনুল ইসলাম আকরামসহ আরও অনেকেই নতুন কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় জাপা আজ অস্তিত্ব সংকটে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে দলের মাননীয় চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি ও মহাসচিব মজিবুর রহমান চুন্নু এমপির সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন পদবঞ্চিতরা।