রির্পোটিং মোঃ আলমগীর হোসেন : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন ’বীর নিবাস’ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে টিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে নিজের ইচ্ছেমত নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করায় এরিমধ্যে অনেক বাড়ীতে ফাটল ধরেছে। বাড়ী বুঝে নেওয়ার আগেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সারা দেশের মত চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রথম ধাপে ১২ জন বীর মুক্তযোদ্ধা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ”বীর নিবাস”। প্রতিটি বাড়ীর জন্য বরাদ্দ প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। সব ধরনের সুবিধা রেখে উন্নত মানের সামগ্রী দিয়ে বাড়ীগুলো নির্মাণ করার কথা থাকলেও তার কিছুই মানছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অনেকটা ভয়-ভিতি আর কতৃপক্ষকে ম্যানেজ করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে খুশী হলেও নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারে ক্ষুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা। বাড়ী নির্মাণের সময় সকল খরচ ঠিাকাদারের বহন করার কথা থকলেও কোন কোন যায়গায় উপকার ভোগীর থেকেই নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের খরচ নেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে পারচৌকা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসরাইলের স্ত্রী মোসাঃ জরিনা বেগম জানান, বাড়ী নির্মাণ করার সময় ইট,বালু খোয়া, রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য সামগ্রী পরিবহনের খরচ আমাকেই দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয় বড়ী নির্মানের সময় আমার টাকায় মেশিন ভাড়া করে এনে পনির ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এ সব খরচ ঠিকাদারের চাপে পড়ে আমাকে দিতে হয়েছে। উপজেলার কয়লা দিয়াড় এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোসাঃ নার্গিস বেগম বলেন, শুনেছি সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১৩ লাথ ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। কিন্তু এমসন ভাবে ঘর তৈরি করা হচ্ছে যা এখনিই ফেটে যাচ্ছে। তার চেয়ে ১০ লাখ টাকা আমাদের দিলে এর চেয়ে ভালো বাড়ী আমরা বানাতে পারতাম। বিনোদপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মোহাম্মদ ও তার ছেলে জামাল উদ্দিন বলেন, সরকার আমাদের বাড়ী দিচ্ছেন, এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঘর তৈরি করায় এখনি তা ফেটে গেছে। এক বছর থেকে কাজ চললেও এখন পর্যন্ত তা শেষ হয়নি। সরকারি কোন কর্মকর্তাও দেখতে আসে না। ঠিকাদার কে বললে হুমকি ধামকি দেয়। চৌকা মনাকষা গ্রামের আর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী প্রভাত সিংহ বলেন, এ কেমন ঘর দিলো সরকার? যার কোন মাপ ঠিক নেই। ১০ ইঞ্চি গাথনি দেয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে ০৫ ইঞ্চি। কিছু বলতে গেলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় ঠিকাদার। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রধান মন্ত্রীর উপহার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১২ টি বীর নিবাস তৈরির দায়িক্ত পেয়েছেন ঠিকাদার সেকান্দার আলী। কিন্তু এ সব বাড়ী নির্মাণে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছেন তিনি। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এখান থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। উপকার ভোগীদের দাবি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে এমন অনিয়ম শয্যকরা হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলুর রশিদ সনু। তিনি বলেন, হয়তো আমার পক্ষে প্রতিটা বাড়ি গিয়ে তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না তবে যতটুকু জানলাম তাতে শিডিউল মোতাবেক কাজগুলো হচ্ছে না,অত্যান্ত দূর্বলভাবে কাজ হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এদিকে সরাসরি দেখা না পেয়ে মুঠো ফোনেই কথা হয় শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হায়াত এর সাথে। অভিযোগ জানাতেই অফিসে এসে ব্যাখ্যা নিতে বললেন তিনি। আর অভিযোগ প্রমান হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন এই কর্মকর্তা। যাদের অবদানে এই দেশে এই লাল-সবুজ পতাকা। তাঁদের বড়ী নির্মাণে এমন অনিয়ম মেনে নিতে পারছেন না বীর সেনারা। অবিলম্বে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।