আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতৃত্ব ও ইতিহাসের বচন

প্রকাশিত: ৮:১৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৩

রিপোর্টিং,বেদুইন হায়দার লিও : আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ৪৩ বছর। তাই আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতৃত্ব কে দিবেন সেটা নিয়ে আছে মহা গুঞ্জন এবং শেখ হাসিনা পরবর্তী আওয়ামী লীগ টিকবে কিনা এটা নিয়ে একটি মহলের আছে নানা সংশয়। আজকে আমি একটু বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো যারা দাবি করে শেখ হাসিনা পরবর্তী আওয়ামী লীগের টিকে থাকার ব্যাপারে।

প্রসংগত ভাবেই আসে আওয়ামী লীগ সৃষ্টির ইতিহাসের কথা। ইতিহাস থেকে দেখা যায় এটি আসলে কিছু বঞ্চিত মানুষের মুক্তির প্রয়োজনে সৃষ্টি হয় আওয়ামী লীগ।
গনতন্ত্রের বরপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাসেমের নেতৃত্বে মুসলিম লীগের একটি প্রগতিশীল অংশ পাকিস্তান রাস্ট্রের জন্মের পর থেকেই সরব ছিল।যারা ইতিহাস জানেন তারা সবাই জানেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেন রোডের রোজ গার্ডেন প্যালেসে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যার সভাপতি ছিলেন টাঙ্গাইলের মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক। পরবর্তীকালে, ১৯৫৫ সালে মওলানা ভাসানীর উদ্যোগে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটির নাম থেকে পরে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়; নাম রাখা হয়: ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।

ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় একটি চেতনার ক্রমবিকাশ মান ধারা আওয়ামী লীগ কোন ব্যাক্তি বিশেষের লিমিটেড কোম্পানি না। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাসেম, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী কিম্বা টাঙ্গাইলের মাটি মানুষের নেতা শামসুল হক ও কিন্তু বেশি দিন সেবা দিতে পারেনি দলকে। এই সব পাহাড় সমান ব্যাক্তিত্বের শুন্যতা পুরণে বেশি সময় নেয় নি দলটি কারন দলটি তখন বলিয়ান অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনায়।

আওয়ামী লীগের জন্মসূত্রের আরও কিছু নাম ও কর্মী শিবিরের কথা বিশেষ ভাবে বলতেই হয়। ২৩ জুনের সম্মেলনের আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন শওকত আলী। তার উদ্যোগে ১৫০ নং মোগলটুলিস্থ শওকত আলীর বাসভবন এবং কর্মী শিবির অফিসকে ঘিরে বেশ কয়েক মাসের প্রস্তুতিমূলক তৎপরতার পর ২৩ জুনের কর্মী সম্মেলনে দলের ঘোষণা দেয়া হয়। শওকত আলীর অনুরোধে কলকাতা থেকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একটি মামলা পরিচালনার কাজে ঢাকায় এলে তিনি শওকত আলীকে মুসলিম লীগ ছেড়ে ভিন্ন একটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। শওকত আলী এ পরামর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবিরের নেতৃবৃন্দকে নতুন সংগঠন গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করেন। এসময় কর্মী শিবিরের প্রধান নেতা ছিলেন শামসুল হক। কামরুদ্দীন আহমদ, মো. তোয়াহা, অলি আহাদ, তাজউদ্দীন আহমদ, আতাউর রহমান খান, আবদুল আউয়াল, মুহম্মদ আলমাস, শামসুজ্জোহা প্রমুখ।

প্রথম দিকে এবং পরবর্তীতে শেখ মুজিবুর রহমান কর্মী শিবির কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মতৎপরতায় বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন। মুসলিম লীগের আবুল হাশিম-সোহরাওয়ার্দী গ্রুপ নেতৃবৃন্দ মুসলিম লীগের অন্যায় কাজগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার লক্ষ্যেই এখানে কর্মী শিবির গড়ে তুলেছিলেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৪৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলখানা থেকে ছাড়া পেয়ে ঢাকা এলে তার সঙ্গে শওকত আলীর আলোচনা হয়। শওকত আলী মওলানাকে পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবিরকেন্দ্রিক রাজনৈতিক তৎপরতার কথা জানান। এসময় মওলানা ভাসানী আলী আমজাদ খানের বাসায় অবস্থান করছিলেন। শওকত আলীর সঙ্গে তার প্রাথমিক আলোচনা সেখানেই হয়। এই আলোচনার সূত্র ধরে নতুন দল গঠনের জন্য একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন শওকত আলী। সেজন্যে ১৫০ নম্বর মোগলটুলিতে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। মওলানা ভাসানী সেই বৈঠকে যোগদান করেন। এসময় খোন্দকার আবদুল হামিদের সঙ্গে পরামর্শ করে শওকত আলীর উদ্যোগে ও প্রচেষ্টায় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, ইয়ার মুহম্মদ খানকে সম্পাদক এবং খন্দকার মুশতাক আহমদকে দপ্তর সম্পাদক করে অন্যদেরসহ একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হয়।

উপর্যুক্ত সাংগঠনিক কমিটি ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন রোজ গার্ডেনে নতুন দল গঠনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে এক সম্মেলন আহ্বান করে। রোজ গার্ডেনে ২৩ জুনের বিকেল ৩টায় সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন শামসুল হক, শওকত আলী, আনোয়ারা খাতুন, আবদুল জব্বার খদ্দর, খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আতাউর রহমান খান, মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, আলী আমজাদ খান, শামসুদ্দীন আহমদ (কুষ্টিয়া), ইয়ার মুহম্মদ খান, মওলানা শামসুল হক, মওলানা এয়াকুব শরীফ, আবদুর রশিদ প্রমুখ।

২৪ জুন বিকেলে নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগ মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ঢাকার আরমানিটোলা ময়দানে প্রকাশ্যে জনসভা করে। সভায় আনুমানিক প্রায় চার হাজার লোক উপস্থিত হয়। সেই লাল মওলানা ভাসানী কে ছাড়াই এগিয়ে চলে দল তথা একটি আদর্শ। এর পর মুজিব তাজউদ্দীন কেমিস্ট সবার জানা। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কে ও পরে ৩ নভেম্বর কারা আভন্তরে বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন সহ জাতীয় নেতাদের খুন করে আওয়ামী শেকড় তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

কিন্তু ইতিহাস বড়ই নির্মম জীবিত মুজিবের চেয়ে মুজিবীয় চেতনা আরও বেশি আন্দোলিত করে বাঙালী জাতিকে। এই জন্যেই হয়তো শ্লোগান থাকে এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে।

একটা শ্রেণী তো বেজায় খুশি ছিল এবার আওয়ামী লীগের যবানিকা পাত হলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ তো একদা মুক্তিকামী মানুষের শেষ সমীকরণ আর তাই মানুষের মুক্তির চেতনায় আবার বিকশিত হলো আওয়ামী লীগ। তবে এ কথা সত্য যে ৭৫ এর ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ বিভ্রান্ত হয়ে যায়, বিভক্ত হয়, নেতৃত্বশূন্য হয়। আসলে দলের অধিকাংশ নেতারা কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে যান। সবাই বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বলিয়ান ছিল। দিশাহীন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বড় অংশ তখন জেলে।

আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ১৯৭৬ সালে যিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রসঙ্গত, একটু আলোচনা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সংবিধান পরিবর্তন এবং পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উপড়ে দিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়ের রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করেন। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যেই ১৯৭৬ সালের ২৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সীমিত রাজনৈতিক চর্চার সুযোগ গ্রহণ করে দল পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং রাজনৈতিক দল পুনরুজ্জীবনের লক্ষে ২৫ আগস্ট ঢাকায় দলের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যদের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৭৬ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন লাভ করে। ৩১ আগস্টের বর্ধিত সভায় আরও কিছু সিদ্ধান্ত হয় দলের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সাপেক্ষে। পঁচাত্তরের ৬ জুন যে কার্যনির্বাহী সংসদ ছিলো, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মহিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সেই সংসদ ও মিজানুর রহমান চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে গঠিত প্রস্তুত কমিটি একযোগে কাজ চালিয়ে যাবে। জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি সায়েমের হাত থেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব কেড়ে নেন। বিচারপতি সায়েম তখন নামমাত্র রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল জেনারেল জিয়া অস্ত্রের মুখে সায়েমকে পদচ্যুত করেন এবং রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৭৭ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান প্রহসনের গণভোটের ব্যবস্থা করেন এবং জাতি সেই গণভোট একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছিলো। এরকম একটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই আওয়ামী লীগ পুনরায় নিজেদেরকে সংগঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং ১৯৭৭ সালের ৩ ও ৪ এপ্রিল ঢাকার হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে দলীয় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কাউন্সিলের আগে দলের নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে ঐক্যমতের অভাবে প্রকাশ্য দলাদলি শুরু হয়। কাউন্সিল প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী দলের সভাপতি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন কিন্তু মূল ধারার নেতাকর্মীরা মিজান চৌধুরীর নেতৃত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলোনা। এই পরিস্থিতিতে ৩ ও ৪ এপ্রিল ১৯৭৭ সালে হোটেল ইডেনে কাউন্সিলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি।

এই সময় দলের বহু সিনিয়র নেতা কারারুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। ওই কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয় আপাতত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না করে একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠন করার। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তাকে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ১০ দিনের মধ্যে ৪৪ সদস্যের একটি সাংগঠনিক কমিটির নাম ঘোষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেয় ৪৪ জন ছাড়াও কারারুদ্ধ নেতারা মুক্তি লাভের পর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। বঙ্গবন্ধুর চির বিশস্ত বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ এর সহধর্মিণী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন ১৫ এপ্রিল ৪৪ সদস্যের সাংগঠনিক কমিটির নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু এই সাংগঠনিক কমিটির নাম ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি আরো দানা বাঁধতে থাকে। ১৯৭৮ সালের ৩, ৪, ৫ এপ্রিল তিন দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

৫ এপ্রিল কাউন্সিলের শেষ দিনে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে আব্দুল মালেক উকিলকে সভাপতি করা হয় এবং আব্দুর রাজ্জাককে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটি গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি প্রকাশ্য হয়। মিজানুর রহমান চৌধুরী এই কমিটিকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দেন এবং ১৯৭৮ সালের ১ আগস্ট মিজানুর রহমান চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এর ফলে আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এরকম বাস্তবতায় দলের পক্ষে সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগে মোজাফফর হোসেন পল্টুর নেতৃত্বে আরেকটি ভগ্নাংশ বেরিয়ে যায় এবং সেটিও আওয়ামী লীগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিলো না বললেই চলে এবং এরকম একটি পরিস্থিতি ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করে এবং এই নির্বাচন প্রমাণ করে যে, এত বিভক্তির পরও আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা আছে।

ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির এবং নজিরবিহীন জালিয়াতির পরও আওয়ামী লীগ ৩৯টি আসন পায় এবং প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট পায়।আওয়ামী লীগ মিজান নামে ২ আসন পায়। এ রকম অবস্থায় ১৯৮১ সালের ১৩ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের তিন দিনব্যাপী কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় হোটেল ইডেনে। এই কাউন্সিল অধিবেশনের সর্বসম্মতভাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করা হয় আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আব্দুর রাজ্জাককে নির্বাচিত করা হয়। এরপর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আবার আওয়ামী লীগ যাত্রা শুরু।

এরপর ১৯৮৬ সালে নির্বাচন ১৯৯১ সালে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ। ১৯৯২ সালে বেরিয়ে যান ড. কামাল হোসেন। এরপর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম ও আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ করেন। আওয়ামী লীগ ছিল আছে থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা একদিন থাকবেন তখনো দল থাকবে। দলের ইতিহাস তাই বলে। দলে বিভক্ত থাকবে হবে বহু মোস্তাক বিশ্বাস ঘাতকতা করবে বহু মিজান ও মোজাফফর পল্টু রা পল্টি দিবে পালিয়ে যাবে ঝড় উঠবে দলে কিন্তু যারা আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন তাদের বলছি আওয়ামী লীগ থাকবে দল হিসাবে। আওয়ামী লীগ শুধু একটি দল নয় একটি আদর্শের নাম। তাই আওয়ামী লীগের উচিৎ মুজিব বাদ কে প্রতিষ্ঠিত করা। স্বাধীন বাংলাদেশের যেমন থাকবে ঠিক তেমনি একটি মুজিব বাদি ধারাও থাকবে। ইতিহাসের আর এক সত্যি হলো এদেশে দুটি একটি মুজিব বাদি ধারা আর একটি তার বিরোধী। বিএনপি এই বিরোধী ধারাকে প্রমোট করতে পরেছে তাই তারা টিকে আছে।

পরিশেষে বলা যেতে পারে যারা শেখ হাসিনার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আওয়ামী যুগের অবসান কল্পনা করছেন ইতিহাস কিন্তু তাদের কে সুবার্তা দিতে পারছেনা।