মাঠের বাজার আবু বক্কর ফাজিল মাদ্রাসার অদ্যক্ষের নানা দুর্নীতি

প্রকাশিত: ২:০৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২২

রিপোর্টিং,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাঠের বাজার আবু বক্কর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ সাইদুররহমান ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার কথিত জামাই ও ভাতিজাকে ওই মাদ্রাসায় কর্মচারী হিসেবে নিয়োগের পায়তারা ফাঁস। প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির দুজন অভিভাবক সদস্য মুহাম্মদ নাজমুল হক প্রধান ও আবদুল মালেক বাদী হয়ে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী সহকারী বিজ্ঞ জজ আদালতে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অধ্যক্ষ সহ ১১ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা (মামলা নং ২৩১/২০২২) দায়ের করেছেন।

মামলা ও সরেজমিনে প্রকাশ, ওই মাদ্রাসার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে নোটিশ মারফত ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ২৮ জুন ২০২২ ইং তারিখে এক সভা আহবান করা হয়। উক্ত সভায় ২নং এজেন্ডায় উল্লেখ ছিলো যে,অত্র মাদ্রাসায় “অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক”, নৈশ প্রহরী ও ঝাড়ুদার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা। অথচ ওই ধুরন্ধর অধ্যক্ষ পরবর্তীতে ১ পহেলা আগস্ট ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সমকাল ও গাইবান্ধা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মাধুকর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, ১) অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক, ২)অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও ৩) পরিচ্ছন্ন কর্মী। যা নোটিশের সাথে মিল নেই এবং সাংঘর্ষিক।

এদিকে,নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অধ্যক্ষ তার কথিত জামাতাকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর দরখাস্ত করান। এছাড়া তার ভাতিজা অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক পদে দরখাস্ত করেন। ওই পদ গুলোতে তাদেরকে নিয়োগ দিতে অধ্যক্ষ পায়তারা চালাচ্ছেন বলে বিস্তর অভিযোগ করেন মামলার বাদী পক্ষ। মজার কথা বিধিতে না থাকলেও এ নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে অধ্যক্ষ আবার নিজেই ওই নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব এর দায়িত্বরত আছেন। এছাড়াও নিয়োগ কমিটিতে অধ্যক্ষ নিজের সুবিধা আদায়ে ওই প্রতিষ্ঠানের কনিষ্ঠ জুনিয়র শিক্ষককে নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে রেখেছেন। উক্ত অধ্যক্ষ আবার গাইবান্ধা শহরের বাস টার্মিনাল জামে মসজিদের পেশ ইমাম হিসেবে আছেন।

ইসলামী আরবী বিশ্ব বিদ্যালয়ের বেসরকারী মাদ্রাসা শিক্ষক ও কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী সংক্রান্ত প্রবিধান ২০১৯ এর ৪ (৬) বিধান মোতাবেক নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের কোনো সদস্যের নিকট নিকটাত্মীয় যদি প্রার্থী থাকে তবে তিনি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হতে পারবেন না।

আর এসব সরকারি বিধি বিধানকে বুড়োআঙুল দেখিয়ে অধ্যক্স নিজেই নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন। যেখানে সিনিয়র শিক্ষক উক্ত নিয়োগ কমিটির সদস্য হওয়ার কথা,সেখানে অধ্যক্ষ তার নিকটাত্মীয়কে নিয়োগদানের জন্য তার নিজের ইচ্ছেমতো জুনিয়র শিক্ষককে উক্ত নিয়োগ কমিটিতে রেখেছেন।

এবিষয়ে মামলার বাদী ও অভিভাবক সদস্য মুহাম্মদ নাজমুল হক প্রধান বলেন,বিধি সম্মতভাবে কর্মচারী নিয়োগ হোক এটি আমরা চাই। কোনো বেআইনিভাবে,স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে যেনো নিয়োগ না হয় সেজন্য আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। এছাড়া তারা আরো জানান,ইতিপূর্বে ওই অধ্যক্ষ মাদ্রাসার টিন শেড ওয়াল আপ ঘর নিলামে বিক্রি না করে সে ঘরের টিন ও ইট গুলো তিনি তার গাইবান্ধা শহরের নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে গোয়াল ঘর তৈরী করেছেন। যা এখনো দৃশ্যমান।

ওই মাদ্রাসার অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন,বিধি মোতাবেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি,বিধি মোতাবেক নিয়োগ হবে। আর আপনারা কতো লিখবেন লেখেন বলে আস্ফালন মুঠোফোনে জানান।