সংঘবদ্ধ প্রতারক ভূয়া র‌্যাব সদস্য পরিচয় প্রদানকারী চক্রের মূল হোতাসহ ০৬ সদস্য’গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১:২৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২২

রির্পোটিং ইসা মোহাম্মদ চট্রগাম থেকে : বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবরুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।  গত ২৬ জুন বেলা পাঁটটার দিকে মোঃ ইদ্রিস পাটোয়ারী (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে জাল দলিল ষ্ট্যাম্প মজুত এবং বিক্রয় করার অপরাধে সিপিসি-২, হাটহাজারী ক্যাম্প, র‌্যাব-০৭ চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল আটক করে। পরবর্তীতে রুবেল নামের এক ব্যক্তি ক্যাম্প কমান্ডারের ড্রাইভার এবং র‌্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে ইদ্রিস পাটোয়ারীর স্ত্রী’র মোবাইলে কল করে জানায়-“আপনার স্বামীর নিকট কোন প্রকার দুই নম্বর জিনিস পাওয়া যায়নি, আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেয়া হবে, যদি আপনি অফিস খরচ ও স্যারের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দেন” ইদ্রিস পাটোয়ারীর স্ত্রী এত টাকা দিতে পারবেনা জানালে রুবেল জানতে চায়, তিনি কত টাকা দিতে পারবেনা ইদ্রিসের স্ত্রী ৫০ হাজার টাকা দিতে পারবে বলে জানালে প্রতারক রুবেল তখন এক লক্ষ টাকা দাবি করে।একপর্যায়ে ইদ্রিসের স্ত্রী সত্তর হাজার টাকা দিতে পারার কথা জানায়। এ প্রেক্ষিতে সেই দিন অথ্যাৎ ২৬ জুন  রাত সারে দশটার দিকে সিএমপি ডাবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ ডোবার দক্ষিনপাড় মিনহাজ ষ্টোর নামক বিকাশের দোকান থেকে ইদ্রিসের স্ত্রী কয়েকবারে প্রতারক রুবেলের দেওয়া পাঁচটা নাম্বারে সর্বমোট ৭০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। চাহিদা মতো টাকা পাঠানোর পরও পরের দিন  ২৭ জুন  মোঃ ইদ্রিস পাটোয়ারী বাসায় না ফেরায় তার স্ত্রী ডাবলমুরিং থানা এবং র‌্যাব-৭, সিপিসি-২, হাটহাজারী ক্যাম্পে খবর নিয়ে জানতে পারে যে, তার স্বামীর নামে জাল দলিল ষ্ট্যাম্প মজুত এবং বিক্রয়ের দায়ে ডাবলমুরিং থানায় একটি মামলা হয়েছে। তখন ইদ্রিসের স্ত্রী প্রতারক রুবেলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সে বিভিন্ন প্রকার তাল বাহানা করতে থাকে। ইদ্রিসের স্ত্রী খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন যে, মোঃ রুবেল হোসেন একজন সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং সে তার সহযোগীরা সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকের কাছে আইন-শৃংখলা রক্ষা বাহিনী/র‌্যাব সদস্য হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন কাজ করে দেয়ার নাম করে বিভিন্ন অযুহাতে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকে। রুবেল তার সহযোগীদের নিয়ে ইদ্রিসকে র‍্যাবের কাছ থেকে ছাড়িয়ে দেয়ার নামে প্রতারণা করে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে ইদ্রিসের স্ত্রী স্পষ্ট বুঝতে পারে।  ইদ্রিসের স্ত্রী প্রতারনার বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করলে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিষয়টি অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পান৷ অতঃপর র‍্যাব-৭, চট্টগ্রামের আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৩০ জুন বেলা সারে তিনটার দিকে  চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ থানা এলাকা একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূল হোতা মোঃ রুবেল হোসেন , মোঃ মানিক হোসেন(৩৮), উভয় পিতা- বাদশা মিয়া@বাচ্চু মিয়া, সাং- মাইজারা, থানা-গোসাইরহাট, জেলা-শরিয়তপুর,এ/পি- ট্যাক্সটাইল আল-আমিন মঞ্জিল গ্রীন ভ্যালি সোসাইটি, থানা-বায়োজিদ বোস্তামি, চট্টগ্রাম মহানাগর,  মোঃ নজরুল ইসলাম(৪৫), পিতা-মৃত নুরুল ইসলাম, সাং-চর আইছা, থানা-দক্ষিন আইছা, জেলা-ভোলা, এ/পি-লেবার কলোনী,হক ভিলা, থানা-ইপিজেড, চট্টগ্রাম মহানগর, মোঃ মিজানুর রহমান(৩৪), পিতা-মোঃ সোহরাব শরীফ,থানা-নলছিটি, জেলা-ঝালকাঠি,এ/পি-০৩ নং ফকিরহাট,সাগীর কোম্পানির বাড়ি, থানা- বন্দর, চট্টগ্রাম মহানগর,  মোঃ নীরব(২১),পিতা-আবু তাহের, সাং- চরসামিয়া, থানা-ভোলা সদর,জেলা-ভোলা,এ/পি-মাইলের মাথা, জোবায়েদ মিয়ার ভাড়া ঘর, ৩৮ নং ওয়ার্ড, থানা-বন্দর, চট্টগ্রাম মহানগর এবং  আবু তৈয়ব সিদ্দিকী @মিঠু(৪৯), পিতা-মৃত মোস্তফা, গরীবুল্লাহ হাউজিং সোসাইটি, থানা-খুলশি, চট্টগ্রাম মহানগরদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। আটককৃত প্রতারকদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা অকপটে স্বীকার করে যে, তারা র‍্যাবের নাম করে ইদ্রিসের নিকট থেকে ৭০ হাজার টাকা আদায় করেছে র‍্যাব প্রতারকদের নিকট থেকে প্রতারণার ৭০ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হন।  স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় যে, ধৃত প্রতারক মোঃ রুবেল হোসেন এবং মোঃ মানিক হোসেন বিভিন্ন কৌশলে মিথ্যা মামলা আনয়ন করে লোকজনদের মামলা থেকে রক্ষা করার প্রতিশূতি দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের নিকট থেকে প্রতারনার মাধ্যমে টাকা আদায় করছে। ধৃত প্রতারকদের মধ্যে মোঃ মানিক হোসেন চট্টগ্রাম জেলার খুলশী থানার মামলা নাম্বার-১৮, তারিখ ১৬-০১-২০১৫, ধারা-১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন১৯(১) এর ৯(ক) এর এজাহারভুক্ত পলাতক আসামী৷ গ্রেফতারকৃত আসামীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।