অসুস্থ হয়েও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার সব তদারকি করছেন পরিকল্পনামন্ত্রী মন্ত্রী নিজেই

প্রকাশিত: ৫:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২২

রির্পোটিং সুনামগঞ্জ  থেকে আফরোজ রায়হান : বন্যার ৭ম দিনেও সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার বানভাসি মানুষের অবস্থা ভয়াবহ। শহরের দিকে পানি অনেকটা নেমে গেলেও গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখনো জলে ভাসছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, জরুরী অষুধপত্র, বিশুদ্ধ পানির অভাবে বাড়ছে হাহাকার। সারাদেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে ছুটে আসছে বিভিন্ন সংগঠনসহ নানান শ্রেণী পেশার মানুষ। সরকারীভাবে চলছে স্মরণকালের ভয়াবহ এই দূর্যোগ মোকাবেলা করার সব সবরকম ত্রাণ তৎপরতা। এদিকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান  করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় উনার নির্বাচনী এলাকা শান্তিগঞ্জ এবং জগন্নাথপুর উপজেলার স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের সকল নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে জরুরী খাদ্য সহায়তা নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন মন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব মোঃ হাসনাত হোসেন। এ পর্যন্ত শান্তিগঞ্জ উপজেলার বন্যার্ত শতভাগ মানুষকে আশ্রয় এবং জরুরী খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন– মন্ত্রী মহোদয়ের কড়া নির্দেশনা ছিল- একটি মানুষ ও যেন আশ্রয়হীন না থাকে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে কেউ যেন কষ্ট না পায়। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে আমরা দিনরাত অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামে গ্রামে অসহায় মানুষের তালিকা করে এ পর্যন্ত উপজেলার শতভাগ মানুষকে জরুরী খাদ্য সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা সবাই মাঠে আছে। কেউ না খেয়ে মরবে না ইনশাআল্লাহ্ ! শান্তিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুজন বলেন– মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে, মন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব মোঃ হাসনাত হোসেনসহ আমরা যুবলীগের কর্মীরা প্রতিদিন রান্না করা খিচুড়ি, চিরে, মুড়ি,গুর, কলাসহ আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে ছুটে যাচ্ছি। তালিকা অনুযায়ী গ্রামে গ্রামে মানুষের বাড়িতে খাবার পৌছে দিচ্ছি। সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম শিপন বলেন– ছাত্রলীগের কর্মীরা কেউ বসে নেই। গ্রামে গ্রামে ছুটে গিয়ে পানিবন্দী মানুষগুলোকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌছে দিয়েছে। এখন নিয়মিত খাবার সংগ্রহ করে সেগুলোও আবার তাদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে  মন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব মোঃ হাসনাত হোসেন  ভাই নিজে থেকে সব তদারকি করছেন। অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন থেকেও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় সব রকম সহযোগিতা এবং দিক নীর্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে শান্তিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নূর হোসেন বলেন– স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় মানুষের দূর্ভোগ বর্ণনা করা কঠিন। অনেকের ঘরবাড়ি পুরোটাই ভেঙ্গে গেছে। গরু ছাগল, ধান, সবজি, মাছ সব জলে গেছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। অনেক বৃদ্ধ, নারী, শিশু, গর্ভবতী মহিলারাও আছেন। হঠাৎ করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই দূর্যোগ মোকাবেলার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুজ্জামান জানান- আকষ্ষিক এই বন্যার ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রশাসন তৎপর। বন্যার্তদের উদ্ধার, নিরাদ আশ্রয়, সরকারী ত্রাণ সহায়তা, আইনশৃংখলা পরিস্থিতিসহ সবরকম নিরাপত্তায় আমরা সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে উপজেলার শতভাগ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়,খাদ্য ও চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে সিলেট এসে নিজ চোঁখে দেখে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে গেছেন। মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী মহোদয় অসুস্থতার জন্য এলাকায় আসতে পারেননি। কিন্তু স্মরণকালের ভয়াবহ এই দূর্যোগ মোকাবেলায় উনার সার্বক্ষণিক ত্রাণ সহায়তা এবং বন্যা পরবর্তী সময়েও অধিক ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সহায়তায়ও উনার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে হাসনাত হোসেন বলেন– মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমনিতেই সুনামগঞ্জের প্রতি আন্তরিক। সুনামগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জকে তিনি এক চোঁখে দেখেন। বন্যা পরবর্তী সময়েও যাতে সাধারন মানুষ ভালোভাবে থাকতে পারে,খেতে পারে তার জন্য যত রকমের সাহায্য দরকার সব রকমের সহযোগিতা বরাদ্ধের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তিনি সাধারন মানুষকে আশ্বস্থ হতে বলেন। টানা বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলে গত ১৬ জুন সমগ্র সিলেট বিভাগ বন্যার পানিতে ভেসে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্যাগ্রস্থ হয়ে পড়ে সুনামগঞ্জ জেলা। প্রায় শতভাগ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। টানা ৪দিন বিদ্যুৎ গ্যাস মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে জনবিচ্ছিন্ন এক ভূতুরে জনপদে পরিণত হয় সারা সুনামগঞ্জ জেলা।