সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা করে না গ্রামীণ ব্যাংক

প্রকাশিত: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২২

খবরের কাগজ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক প্রজ্ঞাপনকে তোয়াক্কা না করে গত শনিবারও অফিস কার্যক্রম চলছে গ্রামীণ ব্যাংকের।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দুই দিন ছুটি ঘোষণা ও নতুন করে অফিস সময় নির্ধারণ করে গত ২২ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করেন যার স্মারক নং ০৫.০০.০০০০.১৭৪.০৮.০০৪.১০.১৮২।

সরকারী নির্দেশনায় সকল সরকারি,বেসরকারি এবং আধাসরকারী প্রতিষ্ঠানকে সাপ্তাহিক দুই দিন (শুক্রবার ও শনিবার) ছুটি রেখে নতুন সময় সূচী সকাল ৮ঃ০০ ঘটিকা হতে ৩ঃ০০ ঘটিকা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে যাহা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবত থাকিবে। কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে এই নিয়ম অমান্য করছে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সংস্থা গ্রামীণ ব্যাংক।

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারও খোলা রাখা হচ্ছে ব্যাংকটি। চালু রাখা হয়েছে কিস্তি আদায় কার্যক্রম। ঋণগ্রহীতারাও অতিষ্ঠ হয়ে পরছে শনিবারও কিস্তি দেওয়ার কারণে। এতে করে একদিকে যেমন সরকারি নির্দেশনা ভঙ্গ হচ্ছে অন্যদিকে সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে আবার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারী সাপ্তাহিক ছুটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাতে করে অন্য সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে বৈষম্যের সৃষ্টি হচ্ছে।

সরেজমিনে শনিবার জেলার বিভিন্ন অফিস খোলা পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায় বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন এবং কেউ কেউ মাঠে ঋণ আদায় কর্ম সূচীতে আছেন ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামীণ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারও তাদের কাজ করতে হচ্ছে। এই শাখা ছাড়াও বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শনিবার ছুটির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছে, কাজের চাপ থাকার জন্য আপাতত শনিবারও কাজ করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন উপজেলা শাখায় কর্মরত কয়েকজন মাঠকর্মীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী নিজেদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শনিবার তাদের কাজ করতে হচ্ছে। আবার টার্গেট দেওয়া এবং বকেয়া টাকা উত্তোলনের জন্য চাপ দেওয়া হয়। এতে করে জেলায় সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্ত্বেও ছুটি কাটাতে পারছেন না।

তারা আরও জানান, সপ্তাহে দুই দিন ছুটি পেলে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে দেখা করা যায়। বাড়িতে গেলে নতুন করে কাজের স্পৃহা পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ছুটির দিনে কাজ করতে হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ঠাকুরগাঁও জোনাল ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, আমরা প্রধান কার্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী মাঠে বকেয়া কিস্তি আদায় করছি এবং মাঠের কর্মসূচী করি।
অফিস শুধু সকালে খোলা থাকে তারপর বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন যেহেতু প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাই মাঠ কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে আবার কোন কর্মচারী যদি শনিবার অফিসে না আসে তার জন্য কোন বাধ্য করা হয় না।